ধর্ম

মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করলে গোশত খাওয়া যাবে?

যাকাত এবং কোরবানির জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা জরুরি। তবে যাকাত আদায়ের জন্য সম্পদ পুরো এক বছর থাকা আবশ্যক। কিন্তু কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে বছর অতিক্রম করা শর্ত নয়। বরং জিলহজের ১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ ই জিলহজ সূর্যাস্ত সময়ের মধ্যে যেকোনো সময় নিসাবের মালিক হলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যাবে। বছর অতিক্রম হয়েছে কি হয় নি; তা দেখা হবে না।

কোরবানির জন্য হৃষ্টপুষ্ট ও স্বাস্থ্যবান পশু নির্বাচন করতে হয়। কোরবানির পশু সব ধরনের শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হওয়া জরুরি। গুণগত দিক থেকে উত্তম হলো, পশুটি দেখতে সুন্দর, নিখুঁত বা দোষত্রুটি মুক্ত ও হৃষ্টপুষ্ট। যে পশু দেখলে পছন্দ হয়।

আবু সাঈদ খুদরি রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. শিংবিশিষ্ট ও মোটাতাজা একটি মেষ কোরবানি করেছেন। এর চেহারা, পা ও চোখ ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৮)

কোরবানির ক্ষেত্রে কখনো গোশত খাওয়া উদ্দেশ্য হয় না। বরং এর মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন সবার প্রত্যাশা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,

‘আল্লাহর কাছে পৌছায় না সেগুলোর গোশত এবং রক্ত, বরং তার কাছে পৌছায় তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি এদেরকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হেদায়াত করেছেন; কাজেই আপনি সুসংবাদ দিন সৎকর্মপরায়ণদেরকে।’ (সূরা হজ, আয়াত : ৩৭)

আমাদের সমাজে মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করার বিধান রয়েছে। কেউ যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষে কোরবানি দেন, তাহলে তার কোরবানি দেওয়া কিংবা মৃতের জন্য কোরবানি করা জায়েজ। তবে যদি ‍মৃত ব্যক্তি অসিয়ত না করে থাকেন, তাহলে এটি নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে।

কোরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতোই সেটি নিজেরাও খেতে পারবে। আবার আত্মীয়-স্বজনকেও দেওয়া যাবে। তবে যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির জন্য অসিয়ত করে গিয়ে থাকেন, তাহলে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। সেক্ষেত্রে গোশত গরিব-মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।

(মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ০১/১০৭; ইলাউস সুনান, হাদিস : ১৭/২৬৮; রাদ্দুল মুহতার : ৬/৩২৬; ফতওয়া কাজিখান : ০৩/৩৫২)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d