রাজনীতি

যে দল সংবিধানকে অসম্মান করে তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনের পেছনে যে মানুষটির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তিনি হচ্ছেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলনীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর।

১৯৮১ সালে দেশে ফিরে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হন। স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নেয়ার পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি দলকে সুসংগঠিত করেন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। এর জন্য তাকে বার বার মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে আছেন এবং সুস্থ আছেন।

এখন দেশ গণতান্ত্রিক উপায়ে সংবিধান অনুযায়ী চলছে। এবং এটি একটি দেশের মূল স্তম্ভ। দেশের সংবিধানকে শতভাগ মেনেই দেশ পরিচালনা করতে হবে। আওয়ামী লীগ সবসময় চেয়েছে যে দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দল গড়ে উঠুক যারা গণতন্ত্রকে লালন করবে এবং সংবিধানকে শতভাগ মেনে চলবে। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের ব্যানারে সন্ত্রাসি কার্যক্রম চালাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যা করছে সেটি সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থী। জ্বালাও-পোড়াও, বাসে আগুন দেয়া, জনগণের জানমালের ক্ষতি করা, কর্মরত পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা, হাসপাতালে আগুন দেয়া, এমনকি দেশের প্রধান বিচারপতি যিনি দেশের সংবিধানের সংরক্ষক, বিচার বিভাগের প্রধান, একটি প্রতিষ্ঠান তার বাসভবনে হামলার মত নিকৃষ্ট কাজ বিএনপি করেছে। কোন রাজনৈতিক দল এসব করতে পারে বলে আমার জানা নেই। এ ধরণের কাজ একমাত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা করা সম্ভব।

বিশ্বের বহুদেশে বহু রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসবাদকে লালন, সংবিধান লঙ্ঘন এবং রাষ্ট্রের জন্য বিপদজ্জনক হওয়ায় নিষিদ্ধ হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘দ্য কমিউনিস্ট পার্টি কন্ট্রোল এ্যাক্ট’ শিরোনামে একটি আইনের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কানাডা, ভূটান, কম্বোডিয়া, জার্মানি থেকে শুরু করে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও রাষ্ট্রের সংবিধান বিরোধী তৎপরতা এবং সন্ত্রাসবাদকে লালল করায় রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার উদাহরণ রয়েছে।

যদি আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে একটি বিষয় স্বীকার করতে হবে যে বাংলাদেশে কিছুসংখ্যক লোকের মধ্যে তাদের এখনও জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকে পুজি করে, এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তারা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই দেশে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে, মানুষ হত্যা, পুলিশ হত্যা বন্ধ করতে হলে, দেশের সংবিধানকে সুরক্ষিত রাখতে হলে বিএনপি’কে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদের সমস্ত কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে বিএনপি মূলত সংবিধানে আঘাত করেছে, সংবিধানকে অসম্মান করেছে। সে দল দেশের সংবিধানকে সম্মান করে না, তারা সংবিধান লঙ্ঘনকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহী। তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না। কারণ একটি দেশে গণতন্ত্র এবং সন্ত্রাস কখনও একসাথে চলতে পারে না। বিএনপিকে যদি নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে বাংলাদেশে এই অরাজকতা, ভাংচুর, অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা বন্ধ করার দ্বিতীয় কোন পথ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d