রোজা রেখে যেভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন
অন্যান্য বছরের মত এবারও রোজা এসেছে গরমে। আর রোজায় দীর্ঘক্ষণ পানাহার বর্জন বা কম ঘুম আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা কেড়ে নিতে পারে। তার জায়গায় রেখে যেতে পারে নিস্তেজতা এবং পানিশূন্যতার ছাপ।
পবিত্র রমজান মাসে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি ত্বকের যত্ন নেয়াও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রুক্ষ ত্বক মানসিক স্বাস্থ্য ও মেজাজের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই এ সময় ত্বকের একটু বিশেষ যত্ন নিতে হবে, তা না হলে ঈদের সময়ে আপনার ত্বক দেখাতে পারে শুষ্ক ও মলিন।
পর্যাপ্ত পানি পান : রোজা রাখার সময়, ত্বক সহজেই আর্দ্রতা হারাতে পারে এবং এতে ত্বকে পানির মাত্রা কমে যায়। দেহে পানিশূন্যতার ফলে ত্বকে বলিরেখা, ভাঁজ, মলিনভাব ও বর্ণের অনুজ্জ্বলতা দেখা দেয়। তাই ইফতার ও সেহরির মাঝামাঝি সময়ে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন এবং বেশি পানিযুক্ত খাবার খান। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়গুলি যেমন চা, কফি এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ডিহাইড্রেশনের ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এর বদলে খেতে পারেন বিভিন্ন মৌসুমি ফলের জুস।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার : প্রতিবার মুখ ধোয়ার পরে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা উচিত, কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, না হলে এটি প্রোটেকটিভ স্কিন ব্যারিয়ার বা ত্বকের সুরক্ষা প্রাচীরকে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। নিয়মিত ভালো মানের একটি ময়েশ্চারাইজার দিনে অন্তত দুইবার ব্যবহার করুন। এছাড়া রোজা থাকা অবস্থায় ত্বক আর্দ্র রাখতে ফেইস মিস্ট বা অয়েল ব্যবহার করা যায়। ত্বক যত শুষ্ক হবে তাতে তত বেশি ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এই সময় ত্বক অনেক নাজুক অবস্থায় থাকে। তাই কোনোভাবেই সানস্ক্রিন ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না।
ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলা : রোজা থাকা অবস্থায় খুব বেশি কড়া বা ভারী প্রসাধনী ব্যবহার না করাই শ্রেয়। ত্বক যেন শুষ্ক হয়ে না যায় সেজন্য বেছে নিতে হবে হালকা উপাদান সমৃদ্ধ পণ্য। মেকআপের ক্ষেত্রেও ভারী ফাউন্ডেশন ও কন্সিলার ব্যবহার করা ঠিক নয়। এগুলো ত্বক আরও শুষ্ক করে ফেলে।
সুষম খাবার : রোজা রাখার সময়ও উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর ত্বক চাইলে খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত।
চিনি, প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণাক্ত আইটেম পরিহার করুন যা আপনাকে ডিহাইড্রেটেড করতে পারে। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত এবং ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া সীমিত করতে হবে।
ফল, শাকসবজি, বাদাম এবং মাছ আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিৎ। এ খাবারগুলি উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ভালো, তাছাড়া আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত।
ত্বকের যত্নের রুটিন : রমজানের সময়, খাওয়া এবং ঘুমের ধরন নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়, তাই অনেকে তাদের দৈনন্দিন ত্বকের যত্নের রুটিন সামঞ্জস্য করে। তাই এই সময় ত্বকের যত্নেও রুটিন করে নেওয়া ভালো।
এ সময় নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করা, ময়েশ্চারাইজ করা ও ক্ষতিকর সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
এছাড়াও রাতে ত্বক পরিষ্কার করা, এমন কোনো ক্রিম ব্যবহার করা যেটায় রেটিনল আছে এবং ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা উচিত। এছাড়া রমজান মাসে ত্বকে ডবল ক্লিনজিং করার পরামর্শ ত্বক বিশেষজ্ঞদের।