ধর্ম

রোজার প্রস্তুতি ও করণীয়

পবিত্র মাহে রমজান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিশেষ উপহার। রমজানে জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করিয়ে জান্নাতি করে তোলার চমৎকার সুযোগ। রমজান আসার আগে রমজানকে পাবার জন্য মু’মিনের হৃদয় ব্যাকুল থাকে। আবার রমজান শেষ হয়ে আসলে মুমিনের হৃদয়ে ইমানী ব্যথা অনুভূত হয়।

মুসলমানদের কাছে পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। রুটিন করে ইবাদতসহ সময়ের কাজ সময়ে করার গুরুত্ব অনেক। কেননা যে কোনো কাজ পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে করলে তা সুন্দর ও সফল হয়। তাই রোজার মাসে করতে হবে পূর্বপরিকল্পনা এবং নিতে হবে প্রস্তুতি।

দোয়া করা : রোজার মাসের প্রস্তুতি হিসেবে মহানবী (সা.) রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন আর আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (মুসনাদে আহমদ)। রমজান মাসে সকলে কেই তাই নিজের জন্য পরিবারের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে হবে। রমজান মাসে রোজাদারের দোয়া আল্লাহ সহজে কবুল করেন।

জামাতে নামাজ আদায় করা : জামাতে নামাজ আদায় করলে তাকে দুটি মুক্তির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং দুই. মুনাফেকি থেকে মুক্তি। তাই রমজানে জামাতে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। জামাতে নামাজ আদায় করলে আত্মার শান্তি মেলে। মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে সমাজের ছোট বড় অনেকের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়। এতে সামাজিক বন্ধন তৈরি হয়।

নফল নামাজ : ফরজ নামাজের পাশাপাশি রমজান মাসে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতে হবে। রমজানে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে, যাতে রমজানে ইশারায়, চাশত, তারাবি এবং তাহাজ্জুদ নামাজ ভালোভাবে আদায় করা যায়। নবী (সা.) বলেন, রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল। (বায়হাকি)

কোরআন তিলাওয়াত : রোজার মাসে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। রমজানে কোরআন তিলাওয়াতে ফজিলত অনেক। তাই রমজানে কোরআন তিলাওয়াতে মনোযোগী হতে হবে। কোরআনে আছে ,রমজান মাস, এতে মানুষের পথপ্রদর্শক ও সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মীমাংসারূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। অতএব, তোমাদের মধ্যে যে-কেউ এ-মাস পাবে, সে যেন এ-মাসে অবশ্যই রোজা রাখে। আর যে রোগী বা মুসাফির তাকে অন্য দিনে এ-সংখ্যা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না, যাতে তোমরা নির্ধারিত দিন পূর্ণ করতে পার ও তোমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করতে পার, আর তোমরা কৃতজ্ঞ হলেও হতে পার। (সুরা বাকারা: ১৮৫)

দান-সদকা : রমজানে দরিদ্র অসহায় লোকদের দান-সদকা করার জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু টাকা পৃথক করে রাখা উচিত। নবী (সা.) রমজানে অধিক পরিমাণে দান করতেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) পৃথিবীর সব মানুষ অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন। রমজান মাসে তাঁর দানের হাত আরও প্রসারিত হতো। (বুখারি)

গুনাহের কাজ না করা : পবিত্র রমজান মাসে সব ধরনের গুনাহ মাফ করা হয়। রোজা রাখার পাশাপাশি এ মাসে গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। মিথ্যা বলা, চোখের জেনা, পরকীয়া, পরনিন্দাসহ সব ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থাকা বাঞ্চনীয়। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d