কক্সবাজার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম ‘অমনি প্রসেসর’

সেনেগাল, ভারতের পর বিশ্বের তৃতীয় ‘অমনি প্রসেসর’ প্রকল্প হচ্ছে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ‘অমনি প্রসেসর’ যে প্রক্রিয়াটি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, ডিস্ট্রিল্ড ওয়াটার, অ্যাস উৎপাদন করা হয়।

জরুরি সহায়তা প্রকল্প (ইএপি) এর অধিনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন কক্সবাজারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল মঞ্জুর জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে। প্রকল্পটির ভারতের অংকুর সাইন্টিফিক ও বাংলাদেশের এসআর করপোরেশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পায়। শতভাগ ভৌত অগ্রগতি শেষে বর্তমানে পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে। যার অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের মধ্যে তৃতীয়। পরীক্ষামূলক চালু হওয়া প্রকল্পে প্রতিদিন ৩০ কিউবিট মিটার বা ৬ টন শুকনো পয়ঃবর্জ্য, ৫ টন জৈব বর্জ্য, ৫ শত কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে মোট ১১.৫ টন বর্জ্য পরিশোধ করতে সক্ষম। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই মূল প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি চালু রাখা হয়। ফলে এই প্রকল্পের জন্য কোনো প্রকার জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ বা ভিন্ন কোনো বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না।

মো. আবুল মঞ্জুর আরো বলেন, প্রকল্পের বর্জ্য পরিশোধনের পর প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার থেকে ১২ শত লিটার ডিস্ট্রিল্ড ওয়াটার (পানি) উৎপাদন হয়। যে পানিকে কোনো আয়ন বা সলিড কোনো সল্ট থাকে না, শুধু হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন আয়ন থাকে। ব্যাটারিতে এই পানি আয়নাইজ হয়ে হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন আয়ন হয়ে ইলেক্ট্রিসিটি তৈরি করে এবং হাইড্রোজেন গ্যাস হয়ে থাকে। এটি বাজারজাত করা যাবে। একই সঙ্গে প্রকল্প থেকে প্রতিদিন গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে ১২ শত থেকে ১৫ শত কেজি অ্যাস। যা সিমেন্টসহ নানা কাজে ব্যবহার করা হয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে চুক্তি মতে ভারতের অংকুর সাইন্টিফিক তার নিজস্ব দক্ষ জনবল দ্বারা প্রকল্পটি পরিচালনা করছেন। আগামী ২ বছরের মধ্যে অংকুর বাংলাদেশের এসআর করপোরেশনের নিজস্ব লোককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলবেন। এরপর প্রকল্পটি এসআরকে বুঝিয়ে দেবেন। খুব অল্প জায়গায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় সুবিধাও রয়েছে। প্রসঙ্গত: গত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটি উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d