লিভ ইনকে ‘টাইমপাস’ বললেন ভারতের হাইকোর্ট
‘লিভ ইন সম্পর্ক’ নিয়ে ভারতের সুপ্রিমকোর্টের একাধিক পর্যবেক্ষণ রয়েছে। একাধিবার সুপ্রিমকোর্ট লিভ ইন সম্পর্ককে বৈধতা দিয়েছেন। এবার লিভ ইন সম্পর্ক নিয়ে ব্যতিক্রমী পর্যবেক্ষণ দিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
লিভ ইনে থাকা ভিন্ন ধর্মের দুই যুগলের একটি মামলায় সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ‘লিভ ইন সম্পর্কে যতটা না আন্তরিকতা থাকে, তার থেকে বেশি বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মোহ থাকে।’ পাশাপাশি লিভ ইন সম্পর্ক ‘অস্থায়ী’ এবং ‘টাইমপাসে’ পরিণত হয় বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
এ মামলায় লিভ ইন সম্পর্কে থাকা যুগল সুরক্ষা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদী এবং বিচারপতি মহম্মদ আজহার হোসেন ইদ্রিসির ডিভিশন বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ করেছেন।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ সুপ্রিমকোর্টের একাধিক রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানান, ‘কোনো সন্দেহ নেই যে মাননীয় সুপ্রিমকোর্ট বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে লিভ ইন সম্পর্ককে বৈধতা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা আশা করতে পারি না যে, অল্প বয়সি এই যুগল আগামী দিনে দম্পতি হবে।’ যুগলকে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই মামলায় হাইকোর্ট আরও বলেন, ‘প্রতিটি দম্পতিকে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের অভিজ্ঞতা দেখেছি যে, এ ধরনের সম্পর্ক টাইমপাস, অস্থায়ী ও দুর্বল হয়। তাই আমরা কোনো সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে সহমত নই।’
লিভ ইনে থাকা তরুণীর পরিবার তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির অপহরণ এবং বিয়েতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছিল।
তাদের অভিযোগ ছিল, ওই যুবক একজন প্রতারক। তিনি তরুণীর জীবন ধ্বংস করে দিতে চাইছে। তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তা ছাড়া যুবকের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার আইনের বেশ কয়েকটি ধারাতেও মামলা রয়েছে। তার ভিত্তিতে, সুরক্ষা চেয়ে এবং এফআইআর বাতিলের দাবিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই যুগল।
তরুণী অবশ্য দাবি করেছেন, যে তিনি এখন প্রাপ্তবয়স্ক। নিজের ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তার রয়েছে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জানান, এফআইআর বাতিল করার জন্য পর্যাপ্ত কোনো কারণ নেই। আদালত দম্পতিকে বিয়ে করে সম্পর্ককে পাকাপাকি ও আন্তরিক করার পরামর্শ দিয়েছেন।