অন্যান্য

সাইবার নিরাপত্তায় উপভোক্তা আদালত গঠনের দাবি

বাংলাদেশে প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যেভাবে সাইবার ঝুঁকি বাড়ছে ঠিক একইভাবে প্রতিনিয়ত গ্রাহক বা ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে উল্লেখ করে সাইবার নিরাপত্তায় ও প্রতারণা রোধে সাইবার উপভোক্তা আদালত গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেভাবে ভারতের গুজরাটে উপভোক্তা আদালত গঠন করা হয়েছে। আমরা যদি সেই উপভোক্তা আদালতের কার্যক্রম লক্ষ্য করি তবে দেখব, গুজরাটের উপভোক্তা আদালতের পক্ষ থেকে বলা হলো, যদি সময়মতো গ্রাহক সাইবার জালিয়াতির বিষয়ে ব্যাংককে জানিয়ে দেয়, তাহলে ব্যাংককে গ্রাহকের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উপভোক্তা আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হয়, তাহলে তা গাফিলতি হিসেবে গণ্য করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর প্রযুক্তি খাতের বা সাইবার ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য তাদের ক্ষমতা বা আইন কোনোটাই পারমিট করে না। ফলে তারা ভোক্তা স্বার্থে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত সফলতা যেমনি দেখেনি, তারা কার্যক্রম পরিচালনা করতেও খুব একটা উৎসাহী নয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সাইবার নিরাপত্তায় ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এখন পর্যন্ত ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করতে পেরেছে বলে আমরা লক্ষ্য করিনি। কিন্তু দিন দিন বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে এবং সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে কার্যক্রম গ্রহণ করতে চাইছে তার জন্য জনগণকে নিরাপত্তা দিতে সাইবার উপভোক্তা আদালত গঠন করা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি।

বুধবার (২২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রাহক বা ভোক্তা স্বার্থরক্ষায় সাম্প্রতিককালে বেড়েছে সাইবার জালিয়াতি। গ্রাহকের অজ্ঞাতেই তার অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে এই সাইবার জালিয়াতি। কোনো ক্ষেত্রে লিংক পাঠিয়ে ফোন হ্যাক করা হয়, কখনো আবার টাকা দেওয়ার নামে কিউআর কোড পাঠানো হয়, আবার ফোন করে কেওয়াইসির নামে জালিয়াতি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেয় জালিয়াতরা। এই আবহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো উপভোক্তা আদালত।

তিনি বলেন, ভারতের গুজরাটের কনজুমার রিডেসাল কমিশন সাইবার জালিয়াতির শিকার এক গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার উপ-আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এসবিআইকে ৩৯ হাজার ৫৭৮ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আইন ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে, যা আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল করে। এমনকি আমাদের দেশে গত ১৭ নভেম্বর সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি গঠন করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের ভোক্তাদের নিরাপত্তা এবং মামলা নিষ্পত্তি করার বিধান বা কোনো আদালত এখন পর্যন্ত গঠিত হয়নি। যার ফলে এত কঠোর আইন এবং এজেন্সি থাকা সত্ত্বেও গ্রাহক বা ভোক্তারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। আর এ থেকে পরিত্রাণের উপায় একমাত্র সাইবার উপভোক্তা আদালত গঠন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d