স্বাস্থ্য

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ও করনীয়

হার্ট বা হৃৎপিণ্ড মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনে কাজ করে। এই কাজ করতে তার প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। হৃৎপিণ্ডের দেয়ালে থাকা রক্তনালিগুলোর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি হয়। কোনো কারণে এই রক্তনালিগুলোতে ব্লক সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাক। আর হার্ট অ্যাটাকে যারা মৃত্যুবরণ করেন, তাদের বেশিরভাগই প্রথম ঘণ্টার মধ্যে মারা যান।

তাই হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। হার্ট অ্যাটাক যে রোগীর হয়, তাকে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে রোগীর পাশে যারা থাকেন, তাদের কিছু বিষয় জেনে রাখা দরকার। তাদেরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্ব থাকে।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের অনেক ধরনের লক্ষণ আছে। কারও হার্ট অ্যাটাক হলে সব লক্ষণ একসঙ্গে প্রকাশ নাও পেতে পারে।

# বুকে ব্যথা

হার্ট অ্যাটাক হলে বুক চেপে ধরার মতো ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া রোগীর বুকের মধ্যে কিছু চেপে বসে আছে অথবা কিছু আটকে আসছে এমন অনুভূত হতে পারে।

# শরীরের অন্য জায়গায় ব্যথা

বুক থেকে এই ব্যথা হাতে নেমে যেতে পারে। সাধারণত বাঁ হাতে এমন ব্যথা হয়। তবে এই ব্যথা উভয় হাতেই যেতে পারে। হাতের পাশাপাশি চোয়াল, ঘাড়, পিঠ ও পেটে ব্যথা হতে পারে।

# মাথা ঘোরানো বা মাথা ঝিমঝিম করা

হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীর মাথা ঘোরাতে পারে। করতে পারে মাথা ঝিমঝিম। মাথা ঘুরে রোগী পড়েও যেতে পারে।

# বিনা কারণে ঘামতে থাকা

হার্ট অ্যাটাক হলে আক্রান্ত ব্যক্তি বসে বসে ঘামতে পারে। এই ঘামের পরিমাণ অল্প কিংবা বেশি হতে পারে।

# শ্বাসকষ্ট হতে পারে

হার্ট অ্যাটাক হলে মৃদু থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এ সময় রোগীর বমি হওয়া কিংবা বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।

# আতঙ্কিত হতে পারে

হার্ট অ্যাটাক হলে রোগী তীব্র ভয়ে আচ্ছন্ন হতে পারে। অস্থিরতার পাশাপাশি এমন মনে হতে পারে, তিনি মারা যাচ্ছেন।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখলে যা করা উচিত

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ যদি দেখা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে কাছের হাসপাতালে যেতে হবে। এর কারণ প্রাথমিক চিকিৎসার মধ্যে প্রথম চিকিৎসা হলো ব্যথাটা কমানো এবং সম্ভব হলে দ্রুত ইসিজি করে রোগ নির্ণয় করা। এর আরও একটি কারণ হলো যত তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পৌঁছাবে, তত তাড়াতাড়ি তার চিকিৎসা শুরু হবে। আর যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হবে, তত তাড়াতাড়ি হার্টের একটি বড় অংশ বাঁচানো সম্ভব হবে।

হার্ট অ্যাটাকের প্রতিকার

# ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।

# ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

# ওজন স্বাভাবিক বিএমআই অনুযায়ী রাখা জরুরি। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

# অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে এবং লবণ কম খেতে হবে।

# নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।

# স্বাভাবিক শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত।

হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা

# লাইফস্টাইল মোডিফাই করতে হবে এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। # ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সে জন্য নিয়মিত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত খেয়ে যেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মেডিসিন বাদ দেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে খুব খেয়াল রাখতে হবে, কোনো মেডিসিন যেন খেতে ভুলে না যায়।

এ ছাড়া যে কোনো জটিলতায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বুকে ব্যথা হলে দ্রুত কাছের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d