হালদার রেণুর দাম বছরে বেড়েছে দ্বিগুন
দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ার পর সংগ্রহ হয়েছে প্রচুর ডিম। এসব ডিম নেয়া হয়েছিল আশপাশের হ্যাচারিগুলোতে। এখন রাউজান-হাটহাজারী হ্যাচারিগুলোতে উৎপাদিত রেণু দেদার কেনা-বেচা চলছে। এবার প্রতি কেজি রেণু বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাষিরা বলছেন, দাম অনেক চড়া। এক বছরের ব্যবধানে দাম দ্বিগুণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনেকে। তবে হালদা গবেষকরা জানান, আজ কাল থেকে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে আরও ডিম ছাড়বে। আর তখন দাম কমতে পারে।
দেখা যাচ্ছে, ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের পর হালদা পাড়ের জেলেদের কাছ থেকে রেণু কেনার জন্য হ্যাচারিগুলোতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় হতে ভিড় করছেন মৎস্য চাষিরা। নদীর দুই পাড়ে হাটহাজারী অংশে মদুনাঘাট হ্যাচারিতে, শাহ মাদারী হ্যাচারিতে, মাছুয়াঘোনায়, রাউজানের অংশের মোবারকখীল হ্যাচারিতে ও এনজিও সংস্থা আইডিএফ হ্যাচারিতে উৎপাদিত রেণু বিক্রি হচ্ছে। তবে ২০২৩ সালে উৎপাদিত রেণু বিক্রি হয়েছিল ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার পর্যন্ত। এবার প্রতি কেজি রেণু বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় উৎপাদিত রেণুর দাম এবার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
জেলেরা বলেন, আমাদের হ্যাচারিতে ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু গত ১১ মে থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা মৎস্য চাষিরা আমাদের সাথে দরকষাকষির মাধ্যমে এবার ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি রেণু বিক্রি করছি।
এ ব্যাপারে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এবার হালদা থেকে সংগ্রহ করা ডিমের পরিমাণ ১ হাজার ৬৮০ কেজি। উৎপাদিত রেণু বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৮০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
তিনি জানান, ৪০ কেজি ডিম হতে ১ কেজি রেণু উৎপাদন হয়। সেই হিসেবে উৎপাদিত রেণুর সংখ্যা ৪২ কেজি হওয়ার কথা। জুন মাসে আরও ২টি জোঁ (অমাবস্যা জো-৩ থেকে ৮ জুন, পূর্ণিমার জো- ২০ থেকে ২৪ জুন) রয়েছে। আশা করছি অনুকূল পরিবেশ অর্থাৎ বজ্রপাতসহ ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল নেমে আসলে সেই সময়ে মা মাছ নদীতে পুরোদমে ডিম ছাড়বে। তবে রেণু কম হওয়ায় দাম একটু বেশি। তবে পুরোদমে মা মাছ ডিম ছাড়লে, পর্যাপ্ত পরিমাণে যদি ডিম পাওয়া যায় তাহলে সেই সময়ে রেণুর দাম কিছুটা কমবে।