দেশজুড়ে

হেলিকপ্টারে বিদেশি স্ত্রীকে বাড়িতে আনলেন রেজাউল

বিদেশি স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে নিজ বাড়ি এসেছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী সিরাজগঞ্জ কামারখন্দের ছেলে রেজাউল করিম। এ সময় নবদম্পতি এবং হেলিকপ্টার দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ চারপাশে ভিড় জমান।

উপস্থিত জনতা নবদম্পতি এবং হেলিকপ্টার দেখে উৎসবে মেতে ওঠেন এবং হাততালি দিতে থাকেন।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কর্ণসূতি গ্রামের নিজ বাড়িতে রাজকীয়ভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ফেরেন তিনি। রেজাউল কর্ণসূতি গ্রামে মৃত মুকুল হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, প্রায় ১৭ বছর আগে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে কনস্ট্রাকশনের কাজের জন্য সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান রেজাউল করিম। দীর্ঘদিন সেখানে কাজ করতে করতে একটা সময় নিজেই একটা কোম্পানি খুলে কিছু লোকজন কাজে লাগান বিভিন্ন জায়গায়। এরপর পরিচয় হয় ইন্দোনেশিয়ান বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের নাগরিক ও ব্যাংকার জানুর সঙ্গে। প্রথমে ভালোবাসার সম্পর্ক হলেও গত এক বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে সিঙ্গাপুরেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন রেজাউল। বিয়ের পর থেকে স্মার্টফোনে বাংলাদেশে শাশুড়ি ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা ও দেখা হলেও সরাসরি শাশুড়িকে দেখার এবং শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছে জানান সিঙ্গাপুরের স্ত্রী।

অবশেষে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে স্ত্রীকে আনেন রেজাউল। গ্রামের সবাইকে অবাক করে দিয়ে জাঁকালোভাবে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের কর্ণসূতি গ্রামে যান তিনি।

শনিবার পৌনে ১২টায় উপজেলার নিজ গ্রামের দক্ষিণপাড়া ঈদগাঁও ময়দানে হেলিকপ্টার অবতরণের পর স্ত্রীকে নিয়ে নামার পর প্রাইভেট কারে বাড়িতে যান তিনি। এ সময় নবদম্পতি এবং হেলিকপ্টার দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ চারপাশে ভিড় জমান। উপস্থিত জনতা নবদম্পতি এবং হেলিকপ্টার দেখে উৎসবে মেতে ওঠেন এবং হাত তালি দিতে থাকেন।

সিঙ্গাপুরের বউ এবং হেলিকপ্টার দেখতে আসা ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক আবুল কালাম বলেন, আমাদের গ্রামের ছেলে হেলিকপ্টারে করে এবং বিদেশি বউ নিয়ে গ্রামে আসছে, খুব ভালো লাগছে। এর আগে কখনো এত কাছ থেকে হেলিকপ্টার দেখি নাই। তাই দেখতে এসেছি।

এ ব্যাপারে সিঙ্গাপুর প্রবাসী রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে ছিলাম। গত এক বছর হলো সিঙ্গাপুরের নিয়মরীতি অনুযায়ী আমরা বিয়ে করেছি। আজকে জন্মভূমির নিজ গ্রামে ফিরে খুব ভালো লাগছে।

নিজ গ্রামের ছেলে বউ নিয়ে হেলিকপ্টার করে আসার বিষয়ে জামতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ফেরদৌস বলেন, আমার ভাতিজা সিঙ্গাপুর থেকে গ্রামের বাড়িতে বউ নিয়ে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আসার কথা শুনে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সহস্রাধিক মানুষ দেখার জন্য এসেছে। বিষয়টি নিয়ে কর্ণসূতি গ্রামের সব মানুষের মনে আনন্দের সঞ্চার হয়েছে। গ্রামে নতুন বউ ঘরে আসা উপলক্ষে আগামীকাল অনুষ্ঠান আছে। এক সপ্তাহ গ্রামে থাকার পর আবারো সিঙ্গাপুরে চলে যাবেন রেজাউল এবং তার স্ত্রী। আপনারা সবাই ওদের জন্য দোয়া করবেন।

এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. রেজাউল ইসলাম বলেন, হেলিকপ্টারে করে সিঙ্গাপুর প্রবাসী তার স্ত্রীকে নিয়ে কর্ণসূতি গ্রামে আসবেন বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। তারা বলেছেন, নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তা দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d