১২ দিন পর বাড়ি ফিরল সাগরে ভেসে থাকা সেই ১৫ জেলে
টানা ১২ দিনের বেশি সময় সমুদ্রের লোনা পানিতে ভাসছিলেন ১৫ জেলে। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। উদ্ধারের পর আজ বাড়ি ফিরেছেন তারা। আনোয়ারায় বঙ্গোপসাগর উপকূলের গহিরা সরেঙ্গা ঘাট থেকে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন সেই ১৫ জেলে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে বাড়ি ফিরে আসেন তারা। জেলারা বাড়ির সামনে আসতেই স্বজনরা বুকে জড়িয়ে শুরু করেন বিলাপ। জামাল উদ্দিন নামের এক জেলের মা বিলাপ করে বলেন, ‘মা ডাক আর শুনব না ভেবেছিলাম, আল্লাহ আমাকে ফের মা ডাক শোনালেন। ‘
৩ জানুয়ারি ১৫ জেলে এফ বি মা জননী নামের ট্রলারটি নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান। ওই দিন রাতে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। সেই থেকে সাগরে ভাসছিলেন তারা। কূল-কিনারাহীন সাগরে হারিয়ে যান তারা, ফুরিয়ে আসে খাবার। গভীর সাগরে চরম সংকটে পড়ে জেলেরা। এভাবে ভাসতে ভাসতে একসময় দেশের সমুদ্রসীমা পেরিয়ে মিয়ানমার জলসীমাও পার হয়ে যায় ট্রলারটি। জেলেদের একজন ফোন করে তাদের অবস্থানের কথা জানান ওবায়দুল হক মুন্না নামের এক ট্রলারের মালিককে। তিনি বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে অবহিত করেন।
রোববার রাত সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ওই জেলেদের তাদের ট্রলারসহ নিয়ে সেন্টমার্টিন উপকূলে পৌঁছায়। সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ড জেটিতে অবস্থান নিয়ে ট্রলারের ইঞ্জিন মেরামতের কাজ শেষে বুধবার সকালে আনোয়ারায় ফিরে আসে জেলেরা।
জালাল উদ্দিন নামে এক জেলে বলেন, টানা ১২ দিন সাগরের লোনা পানিতে ভাসছিলাম। এরমধ্যে খাবারও ফুরিয়ে আসে। কিছু শুঁকনো খাবার ছিল। পানি আর সেই শুঁকনো খাবার খেয়ে চারদিন পর্যন্ত ছিলাম। তখন আল্লাহ্ আর মা-বাবাকে স্মরণ করেছিলাম। এক পর্যায়ে ফিরে আসার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎ মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর একটি জাহাজের দেখা মিলে৷ তারা আমাদের দেখতে পেয়ে খাবার ও পানি সহায়তা দেয়। পরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
ট্রলারের মালিক ওবায়দুল হক মুন্না বলেন, ট্রলার বিকল হওযার খবর পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে অবহিত করি। তারা ট্রলারে থাকা ১৫ জন জেলেকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর ওই জেলেরা আজ বাড়িতে ফিরে আসে।