চট্টগ্রামবন্দর

৯ ব্যাংকে লেনদেনে চট্টগ্রাম বন্দরের নিষেধাজ্ঞা

৯টি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব ব্যাংক থেকে ইস্যুকৃত সকল প্রকার পে-অর্ডার, চেক, ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস শাকুর এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেন। শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির সচিব ওমর ফারুক।

লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ৯ ব্যাংক হলো, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক পিএলসি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি, ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।

বিনিয়োগের বিপরীতে ইন্টারেস্ট না পাওয়ায় বন্দর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে সংস্থাটির সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার অধিকার সকল আমানতকারীর রয়েছে। ব্যাংকে বিনিয়োগ করার বিপরীতে ইন্টারেস্ট না পাওয়ায় বন্দর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেসব ব্যাংক থেকে ইন্টারেস্ট পাওয়া যাচ্ছে না, সেই ব্যাংকগুলোকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের কোনো রেসপন্সও পাইনি, যা ব্যাংকিংসুলভ আচরণ পরিপন্থী। দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোতে আমানত রাখতে নিরাপদ বোধ না করায় আমরা টাকা তুলে নিতে চাচ্ছি। কিন্তু তাও সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে বাধার সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও যোগাযোগ করা হয়েছে।’

সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেই বন্দর চেয়ারম্যানের পরামর্শে নয়টি (৯) ব্যাংকের সঙ্গে ইস্যুকৃত সকল প্রকার পে-অর্ডার, চেক, ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান বন্দর সচিব।

জানা গেছে পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় চট্টগ্রাম বন্দরের ২২টি মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ১৭৯ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী, আমানতের মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখে সুদ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকলেও গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বন্দরকে সুদ দেয়া বন্ধ করে দেয় পদ্মা ব্যাংক। এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই শাখার ২২টি মেয়াদী আমানতের মধ্যে ছয়টির বিপরীতে ৯৫ কোটি টাকা নগদায়নের জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পদ্মা ব্যাংক ছাড়াও চিঠি দেয়ার পরও বন্দরের তহবিলে টাকা জমা দিচ্ছে না এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বেসিক ব্যাংক, আইসিবি, ন্যাশনাল ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া এস আলম সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চারটি শাখায় ২১২ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চারটি শাখায় ১৯০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দুটি শাখায় ১১৫ কোটি টাকা ও ইউনিয়ন ব্যাংকের ১১টি শাখায় ৪১১ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ রেড জোনে থাকা ব্যাংকে টাকা রাখা প্রসঙ্গে চবকের অর্থ ও হিসাব বিভাগের ঊর্ধ্বতন হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (ব্যয়) মো. হেলাল বলেন, ‘আসলে কোন সময়ে এসব টাকা প্রাইভেট ব্যাংকে বিনিয়োগ হয়েছে তা ঠিক বলা যাবে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা এফডি করে রাখা হয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক বা নিরাপদ ব্যাংক নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য থাকে না। সিনিয়র অথরিটি থেকে যে নির্দেশনা আসে, সেটাই করতে হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d